ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর মাঠ পর্যায়ে জরিপ সংক্রান্ত আইনের বিধান অনুসরণ পূর্বক মাঠ জরিপের মাধ্যমে প্রতিটি ভূমি খন্ডের স্বত্বলিপি (খতিয়ান/নক্শা) প্রণয়ন করে। 01 জন মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব), 03 জন পরিচালক (যুগ্ন-সচিব), ০৪ জন উপ-পরিচালক (উপ-সচিব), 14 জন রিভিশন/ জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার (উপ-সচিব), 40 জন চার্জ অফিসার/সদর সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার/প্রেস অফিসার (সিনিয়র সহকারী সচিব) এবং 246 জন সহকারী সেটেলমেন্ট অীফসারসহ প্রায় 06 হাজার কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই অধিদপ্তরে কর্মরত আছেন।
স্তরের নাম | সেবার ধরন, বিবরণ ও ভূমি মালিকের করনীয় | সেবা প্রদানে নির্য়োজিত কমকতা/ কর্মচারী | ||||||||||||||||||||||
বিজ্ঞপ্তি প্রচার | জরিপ শুরু করার পূর্বে সেটেলমেন্ট অফিসার স্থানীয় প্রশাসনসহ ভূমি মালিকগণকে অবহিত করে জরিপ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেন। এ কাজে মাইকিং ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপনসহ ব্যাপক জনসংযোগ করা হয়। জরিপ বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার পর পরই ভূমি মালিকগণকে জরিপের প্রস্তুতিমূলক কাজ হিসেবে নিজ নিজ জমির আইল/সীমানা সঠিক ভাবে চিহ্নিত করে রাখতে হবে। | সেটেলমেন্ট অফিসার/সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার | ||||||||||||||||||||||
ট্রার্ভাস | কোন মৌজার নক্শা সম্পূর্ণ নতুন করে প্রস্তুত করতে সরজমিনের সাথে সঙ্গতি রেখে একটি নির্দিস্ট স্কেলে প্রাথমিক ভাবে নক্শা প্রস্তুতের যে কাঠামো স্থাপন করা হয় সেটাই ট্রার্ভাস। ট্রার্ভার্সের উপর ভিত্তি করে পি-70 সীটের মাধ্যমে মৌজার নক্শা প্রস্তুত করা হয়। কোন মৌজার পুরোনো নক্শা অর্থাৎব্লু-প্রিন্ট সীটের উপর জরিপ করার ক্ষেত্রে ট্রাভার্স করা হয় না। এ স্তরে জরিপ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের সাথে ভূমি মালিকগণকে যোগাযোগের তেমন প্রয়োজন নাই। তবে ভূমি মালিকগণ জমির আইল/সীমানা চিহ্নিত করে রাখবেন। | ট্রাভার্স ক্যাম্প কর্মকর্তা/ট্রাভার্স সার্ভেযার। | ||||||||||||||||||||||
কিস্তোয়ার | এই স্তরে আমিনদল ভূমি মালিকগণ কর্তৃক চিহ্নিত আইল/সীমানা অনুযায়ী প্রতি খন্ড জমি পরিমাপ করে মৌজার নক্শা অংকন কিস্তোয়ার অথবা ব্ল-প্রিন্টে পুরোনো নক্শা সংশোধন করেন। অনেকের ধারণা যে জরিপ কর্মচারীগণ জমির সীমানা ঠিক করে দেন। এ ধারণাটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে জরিপ কর্মচারীগণ বিদ্যমান সীমানা অনুযায়ী নক্সশা প্রস্তুত করেন। | সরদার আমিন/হল্কা অফিসার বা কানুনগো/ ক্যাডাস্ট্রাল সার্কেল অফিসার। | ||||||||||||||||||||||
খানাপুরী | কিস্তোয়ার স্তরে অন্কিত নক্শার প্রত্যেকটি দাগে সরেজমিন উপস্থিত হয়ে আমিনদল জমির দাগ নম্বর দিবেন এবং মালিকের রেকর্ড, দলিলপত্র ও দখল যাঁচাই করে প্রাথমিক ভাবে মালিকের নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য খতিয়ানে লিপিবদ্ধ (খানাপুরী) করেন। এ স্তরে ভূমি মালিকদের প্রধান কাজ হচ্ছে যথাসমেয় নিজে জমিতে উপস্থিত হয়ে আমিনকে জমির মালিকানা ও দখল সংক্রান্ত প্রমাণাদি উপস্থাপন করে খতিয়ানে ঐসব তথ্য লিপিবদ্ধ করানো। | সরদার আমিন/হল্কা অফিসার বা কানুনগো/ক্যাডাস্ট্রাল সার্কেল অফিসার। | ||||||||||||||||||||||
বুঝারত | বুঝারত অর্থ জমি বুঝিয়ে দেওয়া। এ স্তরে নতুন আমিনদল কর্তৃক খতিয়ান বা পর্চায় জমির পরিমাণ উল্লেখ করে বিনামূল্যে উক্ত পর্চা জমির মালিককে সরবরাহ (বুঝারত) করা হয়, যা “মাঠ পর্চা” নামে পরিচিত। পর্চা বিতরণের তারিখটি পূর্বেই নোটিশ/ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচার/এলাকায় মাইকিং এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। পর্চা বিতরণের নির্ধারিত তারিখে ভূমি মালিকগণ নিজে উপস্থিত থেকে জরিপ কমচারীগণের নিকট থেকে পর্চা সংগ্রহ করবেন। ভূমি মালিকগণ পর্চার সঠিকতা যাঁচাই করে দেখবেন এবং প্রাপ্ত পর্চার ভুল-ভ্রান্তি সংশোধন বা পরিবর্তন আবশ্যক হলে নির্দিষ্ট বিবাদ (Dispute) ফরম পূরণ করে তা আমিনের নিকট জমা দিবেন। “হল্কা” অফিসার সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের শুনানির মাধ্যমে দ্রুত ঐ সকল বিবাদ নিষ্পত্তি করবেন। খানাপুরী স্তরে কোন কারণে মালিকের নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত হয়নি এমন ভূমি মালিকগণ বুঝারত স্তরে হল্কা অফিসারের নিকট আবেদনক্রমে ঐ সকল তথ্য রেকর্ড করাবার সুযোগ পাবেন। ভূমি মালিকগণকে মনে রাখতে হবে মাঠ পর্যায়ে সরেজমিন রেকর্ড করার এটাই শেষ সুযোগ। এর পরেও রেকর্ড সংশোধন/প্রণয়নের সুযোগ থাকলেও তা হবে অপেক্ষাকৃত দূরবর্তী কোন ক্যাম্প অফিসে, যা জটিল ও যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ। | সরদার আমিন/ হল্কা অফিসার বা কানুনগো/ ক্যাডাস্ট্রাল সার্কেল অফিসার। | ||||||||||||||||||||||
খানাপুরী কাম বুঝারত | যখন কোন মৌজার ব্লু-প্রিন্ট সীটের জরিপ কাজ করা হয় তখন খানাপুরী ও বুঝারত স্তরের কাজ একসাথে করা হয়। | |||||||||||||||||||||||
তসদিক বা এ্যাটেষ্টেশন | ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে তসদিক স্তরের কাজ সম্পাদিত হয় ক্যাম্প অফিসে। খানাপুরী ও বুঝারত স্তরে খতিয়ান প্রণীত হয় মৌসুমী কর্মচারী বা আমিন দ্বারা। তসদিক স্তরের কাজ সম্পাদন করেন একজন কানুনগো বা রাজস্ব অফিসার। বুঝারত স্তরের মালিকানা সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র ও প্রমাণাদি যাঁচাই করে প্রতিটি খতিয়ান সত্যায়ন করেন তসদিক অফিসার। এ স্তরে ভূমি মালিকগণ পূর্ববর্তী স্তরে প্রণীত পর্চা ও নক্শায় কোন সংশোধন প্রয়োজন মনে করলে বিবাদ (Dispute) দাখিল করতে পারেন এবং উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করে তা সংশোধনের সুযোগ নিতে পারেন। তসদিককৃত পর্চা জমির মালিকানার প্রাথমিক আইনগত ভিত্তি (Legal Document) হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই এ স্তরের কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বর্পূর্ণ। | তসদিক অফিসার/উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার। | ||||||||||||||||||||||
খসড়া প্রকাশনা ও আপত্তি দায়ের | তসদিক সমাপ্তির পর কোন এলাকার জমিন প্রণীত রেকর্ড [খসড়া প্রকাশনা Draft Publication (DP)] সর্বসাধারণের প্রদর্শনের জন্য মৌজাভিত্তিক 30 দিন উম্মুক্ত রাখা হয়। খসড়া প্রকাশনা উম্মুক্ত রাখার সময়কাল উল্লেখ পূর্বক ক্যাম্প অফিস হতে এজন্য বিজ্ঞপ্তিও প্রচার করা হয়। ভূমি মালিকগণের নামের আদ্যোক্ষর অনুযায়ী খতিয়ান বা পর্চা ক্রমবিন্যাস করা হয় বিধায় তসদিককৃত খতিয়ানটির নম্বর পরবর্তীতে বদলে যায়। তাই তসদিককৃত খতিয়ানের নতুন নম্বর অর্থাৎ ডিপি নম্বরটি সংগ্রহের জন্যও ভূমি মালিকগণকে নিজ নিজ পর্চাসহ খসড়া প্রকাশনা (DP) ক্যাম্পে উপস্থিত হতে হয়। DP তে প্রকাশিত খতিয়ান সম্পর্কে কারো কোন আপত্তি বা দাবী থাকলে সরকার নির্ধারিত 10.00 টাকার কোর্ট ফি দিয়ে আপত্তি দায়ের করা যাবে। এটিই 30 বিধির আপত্তি। | তসদিক অফিসার/খসড়া প্রকাশনা অফিসার। (উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার) | ||||||||||||||||||||||
আপত্তি শুনানী | DP চলাকালে গৃহীত আপত্তি মামলাসমূহ সংশ্লিস্ট পক্ষগণকে নোটিশ ইস্যু মারফত জ্ঞাত করে নির্দিষ্ট তারিখ, সময় ও স্থানে শুনানি গ্রহণ করে নিষ্পত্তি করা হয। দেওয়ানী কার্যবিধি অনুসরণে এটি একটি বিচাররিক কার্যক্রম। পক্ষগণ নিজে অথবা প্রয়োজনে মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজ নিজ দাবী “আপত্তি অফিসারের” নিকট উপস্থাপন করতে পারেন। আপত্তি অফিসার পক্ষগণকে বিস্তারিত শুনানী দিয়ে, কেস নথিতে লিপিবদ্ধ ও পর্যালোচনা করে তার সিদ্ধান্ত জানাবেন এবং আইনানুযায়ী প্রস্তুতকৃত রেকর্ডে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনবেন। সন্তোষজনক কারণ উল্লেখ না করে কোন একটি পক্ষের অনুপস্থিতিতে আপত্তি মামলা নিষ্পত্তি করার কোন বিধান নেই। | সংশ্লিষ্ট আপত্তি অফিসার/ সহকারী সেটেলমেন্ট অীফসার, উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস। | ||||||||||||||||||||||
আপীল শুনানী | আপত্তির রায়ে সংক্ষুদ্ধ কোন পক্ষ 31 বিধিতে আপীল দায়ের করলে এ পর্যায়ে ঐ সকল আপীলের শুনানিও নিষ্পত্তি করা হয়। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিস্ট আপত্তি মামলার রায়ের নকল সেটেলমেন্ট অফিসার বরাবর আবেদন দাখিলের মাধ্যমে সর্বাগ্রে উত্তোলন করতে হবে। এ জন্য সরকার নির্ধারিত নিম্নরূপ হারে কোর্ট ফি এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক কার্টিজ পেপার জমা দিতে হবে ঃ
আপত্তির রায় প্রদানের তারিখ থেকে (আপত্তির নকল সরবাহের সময় বাদ দিয়ে) 30 দিনের মধ্যে আপীল দায়ের না করলে আবেদনটি তামাদির কারণে অগ্রহণ যোগ্য হবে। আপীল একটি বিচারিক কার্যক্রম এবং আপীলে ঘোষিত রায়ই চূড়ান্ত। আপীল স্তরের পরে প্রণীত রেকর্ড বিষয়ে কেবল মাত্র তঞ্চকতা ও করণিক ভুলের অভিযোগে সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট প্রতিকার চাওয়া যায়। | সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার/ চার্জ অফিসার/ জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসার। | ||||||||||||||||||||||
চূড়ান্ত প্রকাশনা | উপরোক্ত স্তর সমূহের কাজ সমাপ্তির পর আনুষঙ্গিক কার্যাদি সম্পন্ন করে পর্চা ও নক্শা মুদ্রণ করা হয়। মুদ্রিত নক্শা ও পর্চা পুনঃপরীক্ষা করে তা চূড়ান্ত প্রকাশনায় দেয়া হয়। চূড়ান্ত প্রকাশনার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলায় একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। চূড়ান্ত প্রকাশনার সময়কাল 30 কর্মদিবস। এ স্তরে ভূমি মালিকগণ মুদ্রিত নক্শা ও পর্চা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় করতে পারেন। প্রতিটি পর্চা 12.00 টাকা এবং প্রতিটি নক্শা 100.00 টাকা। কোন্ মৌজার চূড়ান্ত প্রকাশনা কোন্ কার্যালয়ে কবে থেকে আরম্ভ হবে সে সম্পর্কে নোটিশ/পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। | উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস। | ||||||||||||||||||||||
ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও আপীলেট ট্রাইব্যুনাল | মৌজা রেকর্ড চূড়ান্ত প্রকাশনা সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের 1 বছরের মধ্যে চূড়ান্ত প্রকাশিত রেকর্ডের বিষয়ে কোন আপত্তি থাকলে সে সম্পর্কে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল/ দেওয়ানী আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা করা যাবে। ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে কেহ প্রতিকার না পেলে তিনি হাইকোর্টে ল্যান্ড সার্ভে আপীলেট ট্রাইব্যুনালেও আপীল করতে পারেন। | |||||||||||||||||||||||
মৌজা সীমানা নিয়ে বিরোধ | জরিপ চলাকালীন কোন মৌজ/উপজেলা সীমানা সম্পর্কীয় বিষয়ে কোন বিরোধ দেখা দিলে সেটেলমেন্ট অফিসার খানাপুরী-কাম-বুঝারত স্তরে উক্ত বিরোধ বিধিমতে নিষ্পত্তি করবেন। আন্তঃ জেলা সীমানা বিরোধ মহাপিরিচালক, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকগণের সমন্বয়ে নিষ্পত্তি করবেন। | কারিগরী উপদেষ্টা/সেটেলমেন্ট অফিসার। |
1. ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের রেকর্ড ও নক্শা প্রণয়নের কাজ সম্পূর্ণ স্তরভিত্তিক।
ক্রঃনং | যে কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ | যার কাছে অভিযোগ করতে হবে |
01 | 02 | 03 |
01 | মৌসুমী কর্মচারী | 01. সংশ্লিষ্ট হল্কা অফিসার বা কানুনগো। 02. সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসার বা এ.এস.ও |
02 | কানুনগো বা উপ-সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার | 01. সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসার 02. সংশ্লিষ্ট চার্জ অফিসার |
03 | সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার | 01. সংশ্লিষ্ট চার্জ অফিসার 02। সেটেলমেন্ট অফিসার |
04 | উপরে বর্ণিত হয়নি এমন সব কর্মচারী এবং চার্জ অফিসার | 01. সেটেলমেন্ট অফিসার |
05 | সেটেলমেন্ট অফিসার | মহাপরিচালক, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর। |
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর, 28, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরণী, তেজগাঁও, ঢাকা-1208 কর্তৃক প্রকাশিত ও প্রচারিত।